ব্রেইন স্ট্রোক এর লক্ষণ এবং করণীয় জানতেই হবে আপনাকে

ব্রেইন স্ট্রোক এর লক্ষণ এবং করণীয় জানতেই হবে আপনাকে-সুপ্রিয় বন্ধুরা শুরুতেই আপনাদের প্রতি অন্তরের অন্তরস্থল থেকে সালাম জানাচ্ছি আসসালামু আলাইকুম, আপনারা সকলে অবশ্যই সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় অনেক ভালো আছেন।

আজকে বিশ্বায়নের যুগে এই ওয়েবসাইটে অর্থাৎ ইনফোসার্চ 24.com এই লিংকে মানব জীবনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যা এবং সমাধান নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের এই সংক্ষিপ্ত জীবনে চলার পথে শরীরের বিভিন্ন অংশে নানা রকম রোগ ব্যাধি হয়ে থাকে।

ব্রেইন স্ট্রোক-এই রোগ ব্যাধির মধ্যে সবচাইতে ভয়ঙ্কর এবং উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ বা ব্রেইন স্ট্রোক।মুহুর্তের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি পরিবার তথা সমাজে বোঝা হয়ে দাঁড়ায় কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই তার জীবনের অন্তিম মুহূর্ত চলে এসে যায়।

যা একটি পরিবারের জন্য ভয়ঙ্কর একটি সমস্যা। যা থেকে আমাদেরকে অত্যন্ত সচেতনতার শহীদ জীবনযাপন করতে হবে। সবচাইতে কমন ব্যাধি হচ্ছে স্ট্রোক করা। এছাড়া আমাদের প্রচলিত ভাষায় বলে থাকি স্ট্রোক হচ্ছে হৃদপিন্ডের রক্তক্ষরণ কিন্তু না।

ব্রেইন স্ট্রোক মূলত মানুষের মাথায় ঘটে। অসংখ্য ভেইন রয়েছে যেগুলো অনেক সময় রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় আবার অনেক ক্ষেত্রে ছিড়ে যায় ঠিক তখনই ধরে নিতে হবে স্টক করেছে। বর্তমান সময়ে পৃথিবীতে সবচাইতে বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছে।

তাই স্ট্রোক হচ্ছে মূলত এমন এক ভয়ঙ্কর ব্যাধি যা একবার কোন মানুষকে আক্রান্ত করলে যদি সাবধানতা অবলম্বন না করে খুব দ্রুত তার জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। তাই এই স্ট্রোক রোগের লক্ষণ এবং করণীয় কি এ সম্পর্কে আমাদের যথেষ্ট ধারণা থাকতে হবে। যদি সাবধানতার সাথে পথ চলা যায় তাহলে এই রোগের সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যাবে।

তাই নিম্নে ব্রেইন স্ট্রোক এই বিষয়ে অত্যন্ত পরিপূর্ণভাবে কিছু কথা উল্লেখ করা হলো যা আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে।মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোক একজন মানুষের ব্যক্তিগত কোন সমস্যা নয়। এটি হলে মূলত তাঁর পরিবার ও অন্যান্য ব্যক্তি ভিশন সমস্যার মধ্যে পড়ে যায় কারণ এ রোগের সমাধান খুঁজতে গিয়ে ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে গেলে অনেক অর্থের অপচয় করতে হয়।

যা একজন মানুষের পক্ষে খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমান পরিসংখ্যানের ভাষায় জানা যায়, বিশ্বে প্রতি চারজন ব্যক্তির মধ্যে একজন ব্যক্তি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন এবং শুধু মৃত্যুবরণের ওই ব্যক্তিটি ওই ব্যক্তির পরিবার এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে যায় বাস্তবতার সাথে বাকি দিনগুলো ওই পরিবারের বাকি মানুষ জীবন পাড়ি দেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।

ব্রেইন স্ট্রোক

স্ট্রোক কি?

স্ট্রোককে চিকিত্‍সা বিজ্ঞানের ভাষায় সেরিব্রভাসকুলার একসিডেন্ট বলা হয়। আমাদের দেশে ধারণা প্রচলিত আছে যে স্ট্রোক- হার্ট বা হৃত্‍পিন্ডের রোগ (Heart attack)। তা কিন্তু নয়।

স্ট্রোক কাদের হয়?

স্ট্রোক মূলত পঞ্চাশোর্ধ একজন মানুষ অর্থাৎ 50 বছর বয়সের উপরে যে সকল ব্যক্তি রয়েছেন তারা এই রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়।এছাড়া বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে প্রায় সকল বয়সের নারী পুরুষ যেকোনো সময় এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

তার প্রধান কারণ হচ্ছে একজন ব্যক্তি যখন অসম্ভব রকমের চিন্তা মাথায় নিয়ে পথ চলে তারাই এ রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়। তবে পরিসংখ্যান অনুযায়ী তুলনামূলকভাবে নারীর চেয়ে পুরুষরা এই রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। স্ট্রোক হচ্ছে প্রধানত দুই প্রকার। যেমন-

(১) ইস্কেমিক স্ট্রোক (Ischemic stroke) :

এই ধরনের স্ট্রোকে Brain এ আঞ্চলিকভাবে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে মস্তিকের আক্রান্ত এলাকাটি রক্ত পায় না এবং টিস্যু মারা যায়।

(২) হেমোরেজিক স্ট্রোক :

এখানে রক্তনালী ছিঁড়ে গিয়ে রক্ত মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে এবং মস্তিস্কের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এতে মস্তিস্ক তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এ ধরনের রক্তক্ষরণের ফলে মৃত্যুহার ৫০%।

স্ট্রোক কেন হয়?

উচ্চ রক্তচাপ বা অতিরিক্ত হাইপার টেনশন, রক্তে অধিক মাত্রায় চর্বি জমে যাওয়া, ডায়াবেটিস,হূদরোগ, পারিবারিক ইতিহাস থেকে, অতিরিক্ত ধূমপান করা, মদ বা অ্যালকোহল প্রচুর পরিমাণে পান করা ইত্যাদি হচ্ছে এই রোগের প্রধান কারণ।

স্ট্রোক এর লক্ষণ সমূহ :

এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত কোন কিছু বুঝে উঠার পূর্বেই তার জীবনে ভয়ঙ্কর এক দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির হঠাৎ করে বমি করা, শরীর ঘেমে যাওয়া, প্রচন্ড অস্থির হয়ে যাওয়া, মুখ বেঁকে যাওয়া, হাত পা বেঁকে যাওযা, হঠাৎ কোথাও পড়ে যাওয়া, প্রচন্ড মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া, মুখ দিয়ে কোন কথা না বলতে পারাএবং মুখ দিয়ে আবোল তাবোল কোন কথা বলা ইত্যাদি যেকোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলে বুঝতে হবে ওই ব্যক্তিটি স্ট্রোক করেছে।

স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য রোগ :

স্বাস্থ্যসম্মত জীবন ব্যবস্থা বজায় রাখলে অনেকখানি ঝুঁকি কমানো সম্ভব। স্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে হলে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করা উচিত। উচিত কমপক্ষে রোজ ৪৫ মিনিট ঘাম ঝরিয়ে হাঁটা।নিয়মিত সঠিকভাবে ঔষধ সেবনের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

আক্রান্ত হলে করণীয় :

স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলেই রোগীর অবস্থা বা প্রকৃতি অনুযায়ী অবশ্যই হাসপাতালে নিতে হবে অথবা একজন নিউরো মেডিসিন বা স্নায়ু রোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। প্রকৃতপক্ষে স্ট্রোকের চিকিত্‍সার জন্য প্রয়োজন সমন্বিত পরিকল্পনার চিকিত্‍সা ব্যবস্থা।

যেমন কোনো কোনো স্ট্রোক রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে অপারেশন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে, সে ক্ষেত্রে নিউরো সার্জনের উপস্থিতি কাম্য। পাশাপাশি অনেক স্ট্রোক রোগীর হার্টের রোগ থাকতে পারে। এসব ক্ষেত্রে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শের প্রয়োজন পড়ে।

এছাড়া পুর্নবাসনের জন্য ফিজিওথেরাপিষ্ট নানাবিধ ব্যায়ামের (Physiotherapy) মাধ্যমে অঙ্গ সঞ্চালন করে রোগীর জড়তা কাটিয়ে তোলেন। একজন স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর মনোযাতনা প্রবল হয়ে থাকে। Refarens-sportsnet24

পরিশেষে,

পরিশেষে আমাদের একটাই স্লোগান হবে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোক এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে অত্যন্ত সচেতন হয়ে জীবন যাপন করতে হবে। যাতে করে কোনো ভাবেই এই রোগে আক্রান্ত না হয়।

আর যদি হয়েই থাকে তবে কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন রকম নিয়ম-নীতি মেনে জীবনের পথ চলা যা হবে অত্যন্ত বুদ্ধিমানের কাজ। তা না হলে যেকোনো সময় অকালেই নিভে যাবে জীবনের আলো। তাই এই রোগ সম্পর্কে জানুন সচেতন থাকুন, সাবধান থাকুন, ভালো থাকুন, ধন্যবাদ।

অনলাইনে স্বাস্থ্য সেবা নিন & Health Tips 2022

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *