বাংলাদেশে এই প্রথম পানি জাদুঘর
নদ-নদী ও পানি সম্পদ রক্ষায় নীতিনির্ধারকদের আরো উদ্যোগী করে গড়ে তোলা এবং আরো জনসচেতনতা মূলক বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মাণ করা হয়েছে বাংলাদেশের এই প্রথম পানি জাদুঘর ।
কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কের পাখিমারা বাজার সংলগ্ন এলাকা দ্বিতল ভবনে পানি জাদুঘর ।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সাবজেক্টের অধ্যাপক ডঃ ইমতিয়াজ আহমেদ গতকাল সকাল দশটায় এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
এছাড়া বাংলাদেশের বুয়েটের কারিগরি সহযোগিতায় জাদুঘরের নকশা সম্পূর্ণ প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া এর নির্মাণের উদ্যোক্তা বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ নামে একটি এনজিও নির্মাণ করে থাকেন।
পানি জাদুঘর প্রাঙ্গণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ডঃ ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন,
নদী মরে গেলে বাংলাদেশ ও মরে যাবে তার প্রধান কারণ হচ্ছে ,নদীর জন্যই বেঁচে আছে আমাদের এই চির সবুজের দেশ বাংলাদেশ।
অথচ অত্যন্ত দুঃখের সহিত আমাদেরকে জানানো যাচ্ছে যে খুব সহজেই আমরা বর্তমান মানুষরা এই গুরুত্বপূর্ণ নদী গুলো বিভিন্নভাবে মেরে ফেলছি।
এছাড়া এই পানি জাদুঘরে আপনারা যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো দেখতে পারবেন তা হচ্ছে যে, বাংলাদেশের যেসকল নদীতে হারিয়ে গেছে এবং বর্তমান যে নদী গুলো দিন দিন পানি শুকিয়ে পানিশূন্য নদী হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এই নদীগুলো খনন করে কিভাবে আরো উন্নত দিকে যাওয়া যায় এই বিষয়ে সকল তথ্য এখানে পাবেন।
এছাড়া এখানে আরো পাবেন বর্তমান হারিয়ে যাওয়া নদী গুলোর নাম এবং অতীতের যে নদ-নদীগুলো হারিয়ে গেছে তাদের সকল নাম। এবং নতুন করে যে ভবিষ্যতের অধিকরণ হবে সকল নদীর নাম সমুহ উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
এখানে রয়েছে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা তিস্তা ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি আরো অন্যান্য নদী সহ মোট দশটি নদীর পানির নমুনা রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে 57 টি অভিন্ন নদীর পানির নমুনা ভবিষ্যতে এখানে রাখা হবে তারও পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়া মাটির তৈরি হাড়ি পাতিল মাটির তৈরি আরো অন্যান্য সামগ্রী এখানে তৈরি করে প্রদর্শন স্বরূপ রাখা হয়েছে।
এছাড়া পূর্বে মানুষদের জীবনকাল পরিচালনার ক্ষেত্রে যে জিনিসগুলো মাটির তৈরি খুব সাধারন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেগুলোর নমুনা এখানে পাবেন।
এবং জেলেদের মাছ ধরার জাল এবং তাদের মাছ রাখার যে পত্র আরো ইত্যাদি প্রাচীন যুগের সকল সরঞ্জাম এখানে রাখা হয়েছে।
এই জাদুঘরের সামনে একটি নৌকা রাখা হয়েছে যা অর্ধেক বালুতে ডোবানো আছে এবং এই নৌকার অর্ধেক ভারতে ডুবানো মানেই হচ্ছে নদীগুলো মরে যাচ্ছে এটা আমাদের একটি প্রতীক হিসেবে রাখা হয়েছে।
পরিশেষে,
তাই আসুন আমাদের এই বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। কখনোই নদী ছাড়া এদেশের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না । যেকোনো মূল্যের বিনিময়ে হোক আমরা আপনারা পরিবার সমাজ দেশ জাতি সকলকে একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করে আমাদের এই নদীগুলোকে রক্ষা করতে হবে। এটাই আমাদের আগামী প্রজন্মের অর্থাৎ ভবিষ্যতের স্লোগান।